ব্লগিং কী ? এবং কীভাবে শুরু করবো ?


Photo: Collected

ব্লগিং করে আয় করার ইচ্ছা আছে যাদের তাদের জন্য আজকের এই লেখা। এখানে কীভাবে ব্লোগ একাউন্ট খুলতে হয় বা লিখতে হয় সেসব কিছুই বলবো না। বরং কীভাবে বাংলা আর্টিকেল লিখে ব্লগিং করে আয় করা যায় এবং সময় কত লাগে পড়াশোনা করার পাশাপাশি ব্লগিং করে কীভাবে আপনার কেরিয়ার গড়তে পারেন সেই বিষয় নিয়েই আজকে আলোচনা করব আপনাদের মাঝে।

আপনি যদি সত্যিকার অর্থে ব্লগিং করতে চান তাহলে সময় রাখুন ২-৩ বছর। কিন্তু আপনি মনে করেন আপনার ২-৩ মাস কিংবা ১ বছরের মধ্যে ইনকাম করা উচিত তাহলে আমি বলবো আপনি ব্লগিং বাদ দিয়ে অন্য কোন পেশা বেছে নিন। এর কারণ ব্লগিং শুরু করার আগে প্রয়োজন হয় একটি ওয়েব সাইট রেংকিং করানো। আপনার ওয়েব সাইট এগিয়ে নিতে আরো ভিজিটর বৃদ্ধি করা।  আর এর জন্য আপনার অবশ্যই সময়ের প্রয়োজন হবে।  আশা করি আপনারা সবাই আমার কথা বুঝতে পেরেছেন।                                                                                                       
এবার হয়তো ভাবছেন আমি আপনাকে হতাশ করে দিয়েছি ? কিন্তু আসলেই না আপনাকে হতাশ করার কোন ইচ্ছাই আমার নেই। তবে চাই না ব্লগিং করে পরে আপনি হতাশ হয়ে পড়েন। এখন আপনি হয়তো বলবেন ওমুক ভাই তো এক মাসেই ইনকাম শুরু করে দিয়েছে। তাহলে আমি কেন পাড়ব না। হ্যা, আপনি ও পারবেন আয় করতে। কিন্তু একটা সাইট থেকে যদি লিগেল ভাবে ইনকাম করতে চান তাহলে অবশ্যই সময় লাগবেই। কিন্তু সবাই তো অল্প সময়ে সবকিছু রপ্ত করতে পারেন না। আপনি হয়তো অল্প সময়ে পারলেন এবং এটি আপনার জন্য মঙ্গলজনক।
আমার ব্লগিং শুরুর প্রায় ৩ বছর পার হতে চলেছে। এর মধ্যে অনেকেই সফল হয়ে গেছেন কিন্তু দুঃখের বিষয় আমি এখন পর্যন্ত এক টাকাও পেমেন্ট হাতে পাই নি। তবে আশা ছাড়িনি ইনশাআল্লাহ আমি ও একদিন সফল হবো। আমি প্রথমেই হতাশ করে দেওয়ার কারণ হচ্ছে অনেকেই মনে করেন দুই এক মাস লেখালেখি করে এডসেন্স এপ্রুফ নিতে পারলেই এডসেন্স আমাদের হাজার হাজার ডলার দিবে।

কিন্তু বাস্তবে মোটেও এমন নয় ্। একটা ওয়েব সাইট কিংবা ব্লগে এডসেন্স এপ্রুফ করানো তেমন কঠিন কোন বিষয় নয়। আমি ব্লগিং শুরু করার এক মাস পর এডসেন্স এপ্রুফ হয়েছে। কিন্তু ভিজিটর ছিল অনেক কম যেমন ধরেন প্রতিদিন গড়ে ২০-৩০ জন এরকম। যে কারণে আমার ইনকাম ছিল একদম কম। দেখতে দেখতে দুই বছর পার হয়ে গেছে আগের তুলনায় ভিজিটর অনেক বেশি আমার সাইট এ এবং ইনকাম ও আসতে শুরু করেছে। একটা নতুন ব্লগিং সাইটে ভিজিটর নিয়ে আসা অনেক কঠিন। কন্টেন্ট লেখা যতোই ভালো হোক না কেন ভিজিটর সেটা খুঁজে পাবে কোথায় থেকে এবং পড়বে কোথায় থেকে। এজন্য ব্লোগারে অনেক কাজ থাকে যা নতুন ব্লগার দের শিখে উঠতে অনেক সময় লাগে এবং ধৈর্য এর পরীক্ষা দিতে হয়।

তবে এই কাজগুলো আপনি চাইলে প্রফেশনাল ফ্রিল্যান্সার হায়ার করেও করতে পারবেন। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন পড়বে অনেক টাকার। তবে বাস্তবে ব্লগিং করতে গিয়ে ইনভেস্ট করে ব্লগিং করবেন ভাবলে এটা আপনার ভুল ভাবনা হবে। ব্লগিং থেকে যা আয় হবে তার থেকে খরচ অনেক বেশি হয়ে যাবে। আরেকটা কথা হলো যারা ব্লগিং করে আয় করতে চান তারা এতো টাকা ইনভেস্ট করতে চান না। তবে ইনভেস্ট করলে যে আপনি সফল হবেন না এমনটা বলছি না। তবে এখানে সবার অর্থ সম্পদ নাও থাকতে পারে। পারস্পরিক সম্পর্ক থাকে যা আপনাকে না বললেও বুঝতে পারছেন আশা করি।

ব্লগিং করে কত টাকা ইনকাম করা যায় ?

এখানে লিখলেই যে আপনার টাকা আসবে এমনটা নয়। ব্লগিং থেকে মূলত ইনকাম আছে বিজ্ঞাপন এর মাধ্যমে।এই বিজ্ঞাপন গুলো যতো মানুষ দেখবে এবং যতোবেশি ক্লিক করবে আপনার ইনকাম ও ততো বেশি বেড়ে যাবে। এখানে থেকে আপনি আনলিমিটেড আয় করতে পারবেন কোন লিমিট নেই। আপনার সাইটে ভিজিটর না থাকলে আপনি যতোভাল কন্টেন্ট লিখুন না কেন আপনার তেমন ইনকাম হবে না। আপনি ১০০ ডলার হলে পেমেন্ট নিতে পারবেন গুগল এডসেন্স এর মাধ্যমে। প্রতিমাসে ব্লগিং করে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করে এরকম ব্লগার বাংলাদেশ এ অনেক রয়েছে।

আমি কোন টিউটোরিয়াল দিচ্ছি না এখানে। শুধু কিছু মানুষের কমন প্রশ্নগুলোর উত্তর দেওয়ার জন্য লেখা এগুলো। আমার সাইটে এমন কোন পোস্ট করা হয় না যা আপনাকে না জেনে কাজে লেগে পড়তে উৎসাহিত করবে। বরং আপনাকে সঠিক ধারণা দেওয়াই হচ্ছে আমার মূল কাজ। যার মাধ্যমে আপনি জেনে বুঝে কাজে নেমে পড়তে পারবেন। যাইহোক আপনাদের অনেক হতাশার কথা বললাম এখন আপনাদের কিছু ব্লগিং থেকে আয় করার টিপস দিবো আপনি সাথে সাথে ইনকাম না করতে পারলে ও দীর্ঘ মেয়াদি ইনকাম করার সময় আপনার কাজে আসবে।

আপনি যদি একজন শিক্ষার্থী হয়ে থাকেন তাহলে ব্লগিং পেশা আপনার জন্য। এখন থেকে যদি আপনি ব্লগিং শুরু করেন তাহলে একটা সময় আপনি লাভবান হবেনই। এবং একটি রানিং আয়ের পথ তৈরি হবে আপনার জন্য। এখানে রানিং বলার কারণ হচ্ছে এখানে আপনার ইনকাম হবে প্রতিনিয়তই কিংবা হোক দুই চার মাস পর পর। কারণ একটা আর্টিকেল যতোদিন আপনার সাইটের মধ্যে থাকবে ততদিন কমবেশি মানুষ ঐ লেখাটি দেখবে এবং ওখানে থেকে আপনার ইনকাম আসবে। কিন্তু একটা সময় প্ররিশ্রম করতে হবে না সপ্তাহে দুই তিন ঘন্টা সময় দিয়ে দুই একটা পোস্ট লিখলেই হবে। 

একজন শিক্ষার্থী কীভাবে ব্লগিং থেকে তার লেখাপড়ার কোন ক্ষতি ছড়াই লাভবান হবেন এবং তার পাশাপাশি ব্লগিং করে আয় করবেন। ধরুন আপনি একজন সায়েন্স এর শিক্ষার্থী । আপনার পাঠিত মূল বিষয় হচ্ছে বিজ্ঞান। যা আপনাকে প্রতিদিন অনুশীলন করতে হবে। আপনি যদি বিজ্ঞান বিষয়ক ব্লগিং সাইট তৈরি করেন তাহলে কিন্তু আপনার পড়শোনার ক্ষতি ছাড়াই সফল হতে পারেন।

ধরুন আজ 'বিবর্তদান' সম্পর্কে জেনেছেন। আপনি সেটিকে আরো ভালো করে জানার জন্য বিভিন্ন বই বা ইন্টারনেট ঘাটলেন। এবং এক পর্যায়ে খুব ভালো একটা ধারণা অর্জন করলেন সেই বিয়ে। আপনি যা জানলেন এবং বুঝলেন তার ওপর ভিত্তি করে একটি কন্টেন্ট লিখলেন এবং ব্লগারে পাবলিশ করলেন।

আপনি যে বিষয়ে হোক না কেন আপনি সেই বিষয় নিয়েই ব্লগ শুরু করতে পারেন। কারণ ইন্টারনেটে সব বিষয়ে খোঁজখবর হয় প্রতিদিন। এবং যদি আপনি একজন শিক্ষার্থী না হয়ে কর্ম জীবি হোন তাহলে কাজের ফাঁকে অর্থাৎ অবসর সময়ে এই টিপস গুলো ফলো করতে পারেন।

আশা করি আর্টিকেল থেকে অল্পকিছু হলেও ধারণা এসেছে আপনাদের। এবং কিছুটা হলেও বুঝাতে পেরেছি ব্লোগার এর উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে। আরো কিছু জানতে চাইলে কমেন্ট করে জানাবেন ইনশাআল্লাহ পরবর্তী আর্টিকেল এ বলার চেষ্টা করবো।
সবাই ভালো থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।

Post a Comment

Previous Post Next Post